বিজনেস শেখার জিনিস, পড়ার জিনিস না

বিজনেস শেখার জিনিস, পড়ার জিনিস না। এটা দৃঢ় ভাবে মাথায় বসিয়ে নিতে হবে। পড়েই যদি শেখা যেত তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেসে বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে এত এত লোক বেকার কেন? কেন পচিঁশ বছর বয়সে এসেও দশ/বারো হাজার টাকার চাকরিতেও বিবিএ এমবিএ হোল্ডার এত আবেদন পড়ে? কেন বিজনেস বিষয়ে এত জ্ঞান অর্জন করেও নিজে কিছু না করে অন্যের বিজনেসে একটা চাকরি পেতে মরিয়া হয়ে ঘুরে?

প্রশ্নগুলো উত্তর প্রথম লাইনেই! হ্যাঁ, মূলধন একটা বড় ফ্যাক্টর কিন্তু এমন অনেকে আছে মূলধন মূল সমস্যা না। সক্ষমতা আছে, বিজনেসে বড় ডিগ্রিও আছে- তবুও নিজে কিছু করার উদ্যোম বা সাহস পায় না। কারণ থিউরি জেনে ব্যবসা হয় না, প্রাক্টিক্যাল জানা লাগে। এই জন্য বলবো-

বিজনেস আমাদের শিখতেই হবে। আর বিজনেস শিখতে হলে নিজে কাজ করতে হবে, হাটে-ঘাটে নানা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। বিজনেসের থিউরি-জ্ঞান নানা কাজ দক্ষতার সাথে করতে সাহায্য করবে তবে শুধু বইয়ের জ্ঞান দিয়ে বিজনেস হবে না, হবে না।

বিজনেস শেখার একটা কার্যকরি উপায়- স্বপ্ন দেখবো বড়, চিন্তা করবো বড়। কিন্তু শুরুটা করবো ছোট করেই, বড় চিন্তা দিয়ে বড় করে শুরু করতে করতে দেখা যায় অনেকে শুরুটাই করতে পারি না। এমন হলে হবে না, আমাদের এ্যাকশন নিতে হবে। পথে নামতে হবে, পথে হাঁটলেই চেনা যায় পথের অলিগলি।

হালাল উপায়ে অন্যের টাকা নিজের কাছে এমনি এমনি আসবে না! পরিশ্রম করতে হবে, কাজ করতে হবে, মার্কেট বুঝতে হবে, কাস্টমারকে ভ্যালু দিতে হবে। বই পড়ে বড় জোর কিছু বিজনেস জারগন শেখা যেতে পারে কিন্তু বিজনেস শেখা যায় না। তাই বিজনেস আমাদের শিখতেই হবে…

বিজনেসে হুটহাট করে সফলতা আসে না। অনেকগুলো জিনিস একসাথে হলেই ভালো কিছুর হাতছানি দেয়। শুরুটা অনেকটা বীজ বপন করার মতো, বীজ বপন করে ভালো মতো শস্য গোলায় তুলার মাঝে অনেক কিছু করতে হয়। এটি একটি দীর্ঘ প্রকৃয়া। নানা রকম চ্যালেঞ্জ আছে, অনিশ্চয়তা আছে, কষ্টসাধ্য বিষয় আছে। ব্যর্থতা আসবে, আবার শুরু করতে হবে, উঠে দাড়াতে হবে। মাথায় বসিয়ে নিতে হবে, বিজনেস মোটেই সহজ জিনিস না। তবে অসম্ভব কিছুও না… যে জিনিসে চ্যালেঞ্জ থাকে সেখানেই জয়ের আনন্দ থাকে। তাই বিজনেস আমাদের শিখতেই হবে…

আচ্ছা বলেন তো, বিজনেস আসলে কী?

বিজনেস আসলে ভ্যালু ক্রিয়েশন ও ভ্যালু ডেলিভারির মাধ্যমে অন্যকে হেল্প করা। স্যাসটেইনাবল বিজনেস করতে গেলে অন্যকে হেল্প করছি এবং এই হেল্প করার প্রকৃয়াটা উপভোগ করতে হবে। টাকা আসবে… যখন অন্যকে ভ্যালু দিয়ে হেল্প করবো, টাকা ওটার বাই প্রোডাক্ট হিসেবে আসবে। বিজনেস করতে চাইলে মাথায় সেট করে নিন- আমি অন্যকে হেল্প করবো। পণ্য দিয়ে, সেবা দিয়ে, তথ্য দিয়ে, পরামর্শসহ অনেক কিছু দিয়ে। তবে আমাকে দিয়েই বিজনেস হবে…

এবার একটা দরকারী কথা বলি- বিজনেস শিখতে হবে এটা ক্লিয়ার হয়েছেন জানি। কিন্তু শিখবেন কার কাছ থেকে? যে কারো থেকে বিজনেস শিখতে যাবেন না, আপনি যে টাইপ বিজনেস করবেন আপনি শিখতে চেষ্টা করবেন ওই টাইপ বিজনেস যারা করেছে তাদের থেকে। তবেই আপনার শেখাটা ভ্যালিড হবে, ফ্রুটফুল হবে। যে যে রাস্তায় হেঁটেছে সে-ই জানে সে রাস্তার অলিগলি। এজন্য প্রথমে আপনার সবচেয়ে বেশি দরকার হবে রিসার্চ করার মাইন্ডসেট। অনেকে আপনাকে বিজনেসের জেনারেল বিষয়গুলো শেখাতে পারে, বুঝিয়ে দিতে পারে। কিন্তু নিস স্পেসিফিক জরুরী কিছু জিনিস শিখতে আপনার নিস স্পেসিফিক কাউকে খুঁজে নিতে হবে।